সময়েরও ঊর্ধ্বে, যিনি সৃষ্টির শুরু ও শেষের প্রভু। তিনি মহাদেব, শিব, ভোলেনাথ, আশুতোষ যার রূপে মিশে আছে ধ্বংস ও সৃষ্টির চিরন্তন নৃত্য । উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ থেকে শুরু করে প্রতিটি শিবমন্দিরে তাঁর উপস্থিতি অনুভূনুভূত হয় ভক্তের হৃদয়ে। মহাকালের তাৎপর্য ‘মহাকাল’ শব্দের অর্থ সময়ের প্রভু। তিনি কেবল মৃত্যুর দেবতা নন, বরং জীবনের প্রতিটি মুহূমুহূর্তের
নিয়ন্তা।যখন অন্যায়, অহংকার বা অন্ধকার পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে, তখনই মহাকাল প্রকাশ হন ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে।
কীভাবে মহাকালের
আশীর্বাদ লাভ করা যায়
ভক্তি ও বিশ্বাস: মহাকাল ভক্তের হৃদয়ের সরলতায় বাস করেন। তাঁকে তুষ্ট করতে বড় যজ্ঞ বা দামী দান নয়, প্রয়োজন আন্তরিক ভক্তি ও সত্যনিষ্ঠ হৃদয়। প্রতিদিন সকালে “ওম নমঃ শিবায়” মন্ত্রটি উচ্চারণ করলে শিবশক্তি জাগ্রত হয় মনের ভেতর।
সোমবারের উপবাস ও পূজা: সোমবার হল মহাদেবের প্রিয় দিন। এই দিনে ফলাহার উপবাস, গঙ্গাজলে শিবলিঙ্গ অভিষেক, বেলপাতা, ধুতুরা ফুল ও দুধদু দিয়ে পূজা করলে মহাকালের বিশেষ কৃপা লাভ হয়।
ধ্যান ও জপ: নিরব জপের মাধ্যমে মন শান্ত হয় এবং শিবের শক্তির সাথে যোগ স্থাপন হয়। “মহামৃত্যুমৃ ত্যুঞ্জয় মন্ত্র” জপ করলে ভয়, রোগ ও নেতিবাচক শক্তি দূরদূ হয়।
সেবা ও করুণা: মহাকাল শুধুমাত্র মন্দিরে নন, প্রতিটি জীবের মধ্যে বিরাজমান। দরিদ্র, অসহায় বা অসুস্থ মানুষের সেবা করাই প্রকৃত শিবভক্তির পরিচয়। যে ভক্ত অপরের মধ্যে ঈশ্বরকে দেখেন, সেই প্রকৃত আশীর্বাদধন্য।
আত্মসমর্পণ মহাকাল
শেখান: জীবনের প্রতিটি পরিবর্তনকে গ্রহণ করতে। যে ভক্ত অহংকার ত্যাগ করে নিজেকে শিবের চরণে সমর্পণ করে, তাঁর জীবনে শান্তি, শক্তি ও মুক্তি আসে।
মহাকাল হলেন সময়েরও পরের শক্তি, যিনি ধ্বংসের মাধ্যমে নতুন সূচনার বার্তা দেন। তাঁর আশীর্বাদ লাভ মানে কেবল ভৌত সাফল্য নয়, বরং আত্মার জাগরণ। “যে শিবকে জানে, সে নিজেকে জানে।” এই উপলব্ধিই মহাকালের আসল কৃপা।
জয় শ্রী মহাকাল।


ConversionConversion EmoticonEmoticon